আরিফ হোসেনল (লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি) :
লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীর সৃষ্ট অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে উপকূল সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকা তলিয়ে গেছে। গত কয়েক দিনের জোয়ারের পানির চাইতে শনিবার ও রবিবার ( ১৩ / ১৪ আগস্ট) জোয়ারের পানির উচ্চতা ছিল অনেক বেশি।
স্থানীয়রা জানান, স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত তিন ফুটের বেশি পানি উপকূলে ঢুকে পড়েছে। এতে তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের পুকুর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি। ফলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা। আর নদীতে তীব্র ঢেউয়ের ধাক্কায় উপকূল জুড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।
উপকূলের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হঠাৎ পানি চলে আসায় ব্যাহত হয়েছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। কোমর সমান পানি মাড়িয়ে ও সাঁতরে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয়রা জানায়, মেঘনা নদীর উপকূলীয় জেলার কমলনগর এবং রামগতি উপজেলার প্রায় ৩৭ কিলোমিটার এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। নদীর তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার সময় মেঘনার সৃষ্ট জোয়ারের পানি অতি সহজেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এছাড়া সদরের চররমনী মোহন এবং রায়পুরের দক্ষিণ চরবংশী ও উত্তর চর বংশী এলাকায় পানি ঢুকে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোয়ারে কমলনগরের চরমার্টিন, চরকালকিনি, চরফলকন, পাটারিরহাট, সদরের চররমনী মোহন, রায়পুরে উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী ও রামগতির চরআবদুল্লাহসহ প্রায় ১৩টি ইউনিয়ন জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, গত চারদিনের জোয়ারে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জোয়ারের তীব্র স্রোতে ও ভাটার টানে অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ভেঙে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে। সড়কগুলো দিয়ে যাতায়াতে চরম বিপর্যয়ে পড়তে হচ্ছে। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার মতো গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না সড়কের জন্য।
সদর উপজেলা থেকে রামগতি উপজেলা পর্যন্ত প্রায় ৩৭ কিলোমিটার মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নেই। গেল একনেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রায় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। জানুয়ারিতে কাজ শুরু হলেও এখনো দৃশ্যমান নয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার কাজ রেখে পালিয়েছেন। শুধুমাত্র বালু সংকট দেখিয়ে তারা কাজ করছে না। তাদের কারণে প্রতিদিন কেউ না কেউ নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছেন। চাঁদপুরে বালু পাওয়া না গেলে অন্য জায়গা থেকে আনার ব্যবস্থাও তারা করেন না। উপকূলীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগে রেখে তারা বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে যাচ্ছেন।