মো.আরিফ হোসেন :
লক্ষ্মীপুরে ভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত কৃষক আবদুর রশিদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (২ জানুয়ারি) দুপুরে সদর থানায় কিশোরীর খালা বাদী হয়ে ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১ জানুয়ারি) রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম চরমনসা গ্রাম থেকে রশিদকে আটক করা হয়। রশিদ পশ্চিম চরমনসা গ্রামের আবদুর রবের ছেলে। তিনি ৪ সন্তানের জনক ও পেশায় কৃষক।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, কিশোরীর মা-বাবা মানসিক প্রতিবন্ধী। পশ্চিম চরমনসা গ্রামে ভাঙা ঘরে তাদের বসবাস। অভিযুক্ত আবদুর রশিদ তাদের প্রতিবেশী। প্রায় এক বছর আগে কিশোরীকে তিনি কুনজরে রাখেন। ১১ মাস আগে এক রাতের অন্ধকারে জানালা দিয়ে ঢুকে কিশোরীকে ধর্ষণ করেন তিনি। ঘটনাটি কাউকে বললে কিশোরীর ছোট ভাইকে হত্যা করবেন বলে রশিদ হুমকি দেন।
ভয়ে ঘটনাটি কাউকে জানায়নি কিশোরী। তখন তার পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিবেশী একজনের স্ত্রী কিশোরীকে জন্মনিরোধক ট্যাবলেট খাওয়ান। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। রক্তক্ষরণ বন্ধে তিনি তাকে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেন। ধর্ষণের বিষয়টি ওই গৃহবধূ জানলেও চিকিৎসককে শুধু অসুস্থতার কথা জানান।
এদিকে ছয় মাস ধরে প্রায়ই রাতের অন্ধকারে ঘরে ঢুকে রশিদ তাকে (কিশোরী) ধর্ষণ করতেন। সম্প্রতি কিশোরীর পিরিয়ড ফের বন্ধ হয়ে গেলে ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে জানাজানি হয়।
খবর পেয়ে শনিবার রাতে পুলিশ আবদুর রশিদ, তার ছেলে মো. সোহাগ ও গ্রাম্য চিকিৎসক আবদুজ্জাহের মানিককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সোহাগ ও মানিকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে কিশোরীর খালার করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত রশিদকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
মামলার বাদী বলেন, আমার বোন ও দুলাভাই দুজনই মানসিক প্রতিবন্ধী। প্রায় ১১ মাস আগে একবার আমার ভাগ্নি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে পাশের বাড়ির একজন তাকে জন্মনিরোধক ট্যাবলেট খাওয়ায়। তখন তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। বিষয়টি রশিদের স্ত্রীকে আমার ভাগ্নি জানিয়েছে। তখন রশিদের স্ত্রী ঘটনাটি কাউকে জানালে আত্মহত্যা করবে বলে জানায়। এতে ঘটনাটি সে আর কাউকে জানায়নি। এ ঘটনায় আমরা ন্যায় বিচার চাই।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, রশিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে সোপর্দের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।