বিনোদন ডেস্ক :
তিনি চিকিৎসক, তিনি অভিনেতা। তিনি দামি গাড়িতে চড়বেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু না, জনপ্রিয় এই মানুষটি এখনো চড়েন পাবলিক বাসে। পাবলিক বাসে করেই বাসা থেকে যান শুটিং স্পটে।আমরা যে গুণী মানুষটির কথা বলছি তিনি আর কেউ নন আমাদের গাইবান্ধার সন্তান ডাঃ এজাজুল ইসলাম।
এজাজুল ইসলাম পেশায় একজন ডাক্তার। কিন্তু তিনি টিভি পর্দায় এবং চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেন। পাশাপাশি টিভি বিজ্ঞাপনে মডেলিং ও করেন।
ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের স্বপ্ন দেখতেন এজাজুল ইসলাম। চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে প্রথম মঞ্চে অভিনয় করার সুযোগ পান, তার অভিনয়ে দর্শক হেসে উঠেছিল যা তাকে অভিনয় করার ব্যাপারে আরও আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। রংপুরে অবস্থানকালীন সময়ে ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত রংপুর রেডিওতে কাজ করেন এজাজুল ইসলাম। ১৯৮৫ সালে চাকরীর সুবাদে ঢাকায় চলে আসেন। চাকরীর পাশাপাশি টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের তীব্র আগ্রহ থেকে ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের অভিনয় শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। কিন্তু থিয়েটারের কোন অভিজ্ঞতা না থাকায় তিনি কোন নাটকে অভিনয় করার সুযোগ পান নি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী এজাজুল ইসলাম টেলিভিশনে অভিনয় চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আবারও পড়াশোনায় মনযোগ দেন এবং পিজি হাসপাতালে নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগে পোস্টগ্রাজুয়েশনে ভর্তি হন। এসময় একদিন ঘটনাচক্রে সাহিত্যিক-নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের সাথে পরিচয় হয়। এজাজুল ইসলাম তার অভিনয় আগ্রহের কথা জানান তাকে। হুমায়ূন আহমেদ তখন গাজীপুরে তার ধারাবাহিক নাটক ‘সবুজ সাথী’র কাজ শুরু করছেন এবং এজাজুল ইসলামেরও চেম্বার গাজীপুরে। পরিচয়ের তিন চারদিনের মাঝেই হুমায়ূন আহমেদ তাকে ডেকে পাঠান এবং সবুজ সাথী ধারাবাহিকে কাজ করার সুযোগ করে দেন।
হুমায়ূন আহমেদের টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করার পর এজাজুল ইসলাম বর্তমানে প্রায় সব ধরনের নাটক এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র শ্রাবন মেঘের দিন। এর পর তিনি দুই দুয়ারী (২০০১), চন্দ্র কথা (২০০৩), শ্যামল ছায়া (২০০৪) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি তারকাটা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ৩৯তম জাতীয় চলচিত্র পুরষ্কার পান। শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতার পুরস্কারে ভূষিত হন।গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার রসূলপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউক্লিয়ার মেডিসিনে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। এজাজ একজন ডাক্তার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি এখনো তার ডাক্তারি পেশা চালিয়ে যাচ্ছেন। গাজীপুরে তার নিজস্ব চেম্বারে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নিয়মিত রোগী দেখেন তিনি।গাইবান্ধায় জন্মগ্রহণ করা এই মানুষটির প্রতি রইল অনেক অনেক শুভকামনা।
সংগ্রহঃ ফেইজ বুক থেকে