বিশেষ প্রতিবেদক :
সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান।
গনমাধ্যম কর্মীদের তিনি বলেন, “তার ভায়রার সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনিই আমাকে এই মৃত্যু সংবাদ জানিয়েছেন।”
৮১ বছর বয়সী মওদুদ আহমদ কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ২৪ মে ১৯৪০ সালে নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি বিএনপির ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। সাবেক সাংসদ ও অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান পাশ করে বৃটেনের লন্ডনস্থ লিঙ্কন্স ইন থেকে ব্যারিস্টার-এ্যাট-ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে পড়াশুনা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন।
লন্ডনে পড়াশুনাকালে মওদুদ আহমেদ চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদী পত্রিকার লন্ডন সংবাদদাতা হিসেবেও কাজ করেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এ ইয়াহিয়া খান কর্তৃক আহুত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ছিলেন।
১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন] এবং তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। পরে তিনি এরশাদের সরকারে যোগ দেন এবং ১৯৮৫ এর নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন।
৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে রাষ্ট্রপতি এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে মওদুদ আহমদের হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়ে পদত্যাগ করেন । জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ সালে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাঁচবার মওদুদ আহমেদ নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন।