বিশেষ প্রতিবেদক :
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ২২ সদস্যের করোনা ভাইরাস আক্রান্ত। ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল লকডাউন করা হয়েছে।
এক ঘোষণায় মঙ্গলবার (১২ মে) ট্রাইব্যুনাল লকডাউন করা হয়। বিষটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর (প্রশাসন) জেয়াদ আল মালুম।
তিনি বলেন, এক এক করে ট্রাইব্যুনালের দুটি ব্যারাকে থাকা এপিবিএন এর প্রায় ২২ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এখনো প্রায় ১৭ জন সদস্য ট্রাইব্যুনালের ভেতরে অবস্থান করছেন। এ কারণে পুরো ট্রাইব্যুনাল লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।’
তবে ট্রাইব্যুনালের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আপাতত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেপরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এপিবিএন’র একসদস্য গত ২৪ এপ্রিল করোনা পজেটিভ শনাক্ত হন। গত ২৭ এপ্রিল নতুন করে আরও দুই এপিবিএন সদস্যের শরীরে করোনা পরীক্ষায় পজেটিভ পাওয়া যায়। এরপর সেখানে দায়িত্বে থাকা প্রায় ২২ সদস্যের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়ে।
প্রসঙ্গত, রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত পুরাতন হাইকোর্ট ভবনকে আদালত হিসেবে প্রস্তুত করে একে ট্রাইব্যুনালের বিচারালয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (বাংলাদেশ) সংক্ষেপে আইসিটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধ সমূহের বিচার করার জন্য।
২৯ জানুয়ারি ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রস্তাব পেশ করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইবুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়। দীর্ঘ ১০ বছরে ট্রাইবুন্যাল প্রায় অর্ধশত মামলার রায় দিয়েছে৷ কিন্তু আপিল ও রিভিউ শেষে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৮টি মামলার৷
নিষ্পত্তির মাধ্যমে জামায়াতের সাবেক আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সাবেক সদস্য মীর কাসেম আলী এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে৷
ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল ও রিভিউয়ে তার আমৃত্যু কারাদণ্ড বহাল আছে৷
আপিল শুনানি চলার মধ্যেই জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম, নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুস সোবহান ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের মৃত্যু হয়েছে৷
আর সম্প্রতি জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার মধ্য দিয়ে বলা যায় অষ্টম মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলো৷ যদিও তিনি এখন রিভিউ এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ পাবেন৷