সময়ের নুর ডেস্ক :
কোভিড-১৯ সংক্রমনে বৈশ্বিক এ মহামারিতে বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যরা সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য জেনেশুনেই জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন। করোনা বিস্তাররোধে পুলিশকে প্রতিটি কাজেই মানুষের খুব কাছে যেতে হচ্ছে, মৃতব্যক্তির সৎকার, জানাজা, করোনা আক্রান্ত পলাতক রোগীদের ধরে আনাসহ এই ক্রান্তিকালে হাজারো ইনোভেটিভ কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা।তাই নিজের অজান্তেই করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) পুলিশ সদর দফতরের দেয়া তথ্যমতে এ পর্যন্ত সারাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কনস্টেবল হতে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ২১৮ জন সদস্য। কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৫২ জন। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। করোনার এই সম্মুখ যোদ্ধাদের সুস্থ করে তুলতে পুলিশের হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, স্বয়ং পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা।
তিনি নিয়মিত আক্রান্ত সদস্যদের পরিবারের খোঁজখবর নেয়ার জন্য প্রত্যেক ইউনিটের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি করোনায় মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত আর সবাইকে সুস্থ রাখার জন্যও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) বলেন, মানুষের সুরক্ষায় হাসিমুখে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন পুলিশ সদস্যগণ। হচ্ছেন আক্রান্ত ও স্থাপন করছেন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
তিনি রেলেন, সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হচ্ছে। যে কোনো সমাবেশ ও লোকসমাগমে আইনি ব্যবস্থা, অপরাধ দমন, আসামী গ্রেফতার ও তাকে আদালতে প্রেরণ, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য আবশ্যিক খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি সেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দেয়া, দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ, মজুতদারি ও কালোবাজারি রোধ, সরকারি ত্রাণ ও টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়ম ঠেকানোসহ সকল কাজেই পুলিশকে থাকতে হয় সবার আগে ।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব জুড়েই সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশও এই বাস্তবতা থেকে দূরে নয়। আমাদের দুই লক্ষাধিক সদস্যের একটি বড় অংশ সরাসরি মাঠে থেকে করোনার বিস্তাররোধে কাজ করছেন। তাদেরকে যথাসম্ভব সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। এখনও অনেক চাহিদা রয়েছে। চাহিদা পূরণে কাজ করছি আমরা।
ইতোমধ্যেই পুলিশের এই সদস্যগণ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষের কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন। পুলিশের এই ত্যাগে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এগিয়ে আসছেন মানুষের সেবায়। পুলিশ তাদেরকেও সহায়তা করছে মানবিক কাজে।
২৩ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত সারাদেশে আক্রান্ত হয়েছেন কনস্টেবল হতে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ২১৮ জন সদস্য। কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৫২ জন।
সোহেল রানা বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে এই পুলিশই যেমন ছুঁড়েছিল একাত্তরের প্রথম প্রতিরোধী বুলেটটি, যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে অকাতরে জীবন দিয়েছিল পুলিশের হাজারো সদস্য, তেমনি দুর্যোগে ও দুঃসময়ে সব সময়েই বাংলাদেশ পুলিশ রয়েছে সাধারণ মানুষের পাশে।