ঘরের মাঠে বাঘ আর বাইরে গেলে বিড়াল- কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট দলের ক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত কথা এটি। আর দলের তারকা ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মার ক্ষেত্রে এ বাক্যটি যেন, ‘প্রস্তুতিতে বিড়াল আর মূল খেলায় বাঘ’- এ কথার প্রমাণ মেলে রোহিতের পরিসংখ্যানেই।
গত কয়েক বছর ধরেই যেকোনো টুর্নামেন্ট বা সিরিজের প্রস্তুতি ম্যাচে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দেন রোহিত। আর পরে মূল খেলা শুরু হলে তিনিই হয়ে যান সর্বেসর্বা, প্রমাণ করেন নিজের সামর্থ্য, ছাড়িয়ে যান অন্যদেরকে। যার সবশেষ প্রমাণ বলা চলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি।
মিডলঅর্ডার থেকে উঠিয়ে রোহিতকে ওপেনিং করানোর ব্যাপারে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছিল প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজের আগে। তাই মূল খেলার আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্টের একাদশের পক্ষে ইনিংস সূচনা করতে দেয়া হয় রোহিতকে। সেখানে মাত্র ২ বল খেলে ০ রানে আউট হয়ে যান তিনি।
অথচ মূল সিরিজের প্রথম ম্যাচেই দুর্বার এ ডানহাতি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের তুলোধুনো করে খেলেছেন ১৭৬ রানের ইনিংস। মাত্র ২৪৪ বলে এ রান করার পথে ২৩টি চার ও ৬টি ছক্কাও হাঁকিয়েছেন রোহিত। প্রস্তুতি ম্যাচে যেমনই হোক না কেন, মূল ম্যাচে তিনি যে অন্য এক রোহিত- তা বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রথম ইনিংসেই।
অবশ্য এ ধারা চলে আসছে গত ২০১৩ সাল থেকেই। সে বছর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে খেলা দুইটি প্রস্তুতি ম্যাচে যথাক্রমে ৫ ও ১০ রান করেছিলেন রোহিত। অথচ এরপর মূল আসরে ভারতকে শিরোপা জেতানোর পথে জোড়া ফিফটিতে ১৭৭ রান করে হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ফাইনালে গিয়ে পরাজিত হয় ভারত। সেবার একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে মাত্র ১ রান করতে পেরেছিলেন রোহিত। পরে মূল আসরের পাঁচ ম্যাচে ২ ফিফটি ও ১ সেঞ্চুরিতে ৩০৪ রান করে বনে যান টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
আর সবশেষ ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় চমক দেখান রোহিত। যেখানে প্রস্তুতি পর্বে খেলা দুই ম্যাচে মাত্র ২ ও ১৯ রান করতে সক্ষম হন তিনি। কিন্তু মূল আসরে ৫ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটির সাহায্যে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৬৪৮ রান করেন রোহিত।