মমিনুল ইসলাম:
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে জুম্মার নামাজরত অবস্থায় শতশত মুসুল্লির ওপর সন্ত্রাসী হামলায় গত ১৫ মার্চ শুক্রবার মতলব দক্ষিন উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নের হুরমাইশা গ্রামের মৃত হাবিবউল্লা মিয়াজীর ছেলে ডা. মোজাম্মেল হোসেন সেলিম জঙ্গীর গুলিতে নিহত হয়েছে।
ওই হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৬ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।
১৭ মার্চ সরেজমিনে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেলিমের মৃত্যুতে তার বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। নিহত সেলিমের বৃদ্ধা মা জামিলা খাতুন সন্তানকে হারিয়ে পাগল প্রায়। ভাই-বোন ও স্বজনদের আহাজারিতে বাড়ির বাতাস ভারি হয়ে উঠছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ডা. মোজাম্মেল হোসেন সেলিম সাড়ে ৩ বছর আগে মেডিকেল থেকে পাস করে নিউজিল্যান্ডে এফআরসিএস করতে যায়। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকুরী করতেন। ঘটনার পর থেকে তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান নিহতের পরিবার। পরে ১৬ মার্চ বিকালে নিউজিল্যান্ডে বসবাসকারী কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার মুজিবুর নামের এক সহপাঠী ফোন করে মৃত্যুর খবর জানান।
নিহত ডা. মোজাম্মেল হোসেন সেলিমের মেজ ভাই মোঃ শাহাদাত হোসেন মিয়াজী জানান, গত শুক্রবার তাঁর সহপাঠীরা আমাকে মুঠোফোনে ঘটনাটি জানিয়েছে। গত সাড়ে ৩ বছর পূর্বে উচ্চ শিক্ষার জন্য ঋণ করে আমার ছোট ভাই মোজাম্মেল
হোসেন সেলিমকে নিউজিল্যান্ডে পাঠিয়েছি। সে ২০১৫ সালে ঢাকা মিরপুর মার্কস মেডিকেল থেকে ডাক্তারি পাশ করার পর তাকে নিউজিল্যান্ডে পাঠাই। সে নারায়ণপুর পপুলার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে। প্রতি শুক্রবারই আমার সাথে ও মা’এর সাথে মুঠোফোনে কথা বলতো।সেলিমের বড় ভাই’ আব্দুল মালেক মিয়াজী, বড় বোন জোসনা, বৃদ্ধ মাতা জমিলা খাতুন। বৃদ্ধ মাতা পুত্র শোকে কাতর।
খাদেরগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীর জানান, নিউজিল্যান্ডে নিহত ডা. মোজাম্মেল হোসেন সেলিমের মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমি তাদের নিজ বাড়ি হুরমাইশা গ্রামে গিয়েছি এবং তাঁর বৃদ্ধ মাতা ও ভাই-বোনদেরকে শান্তনা দিয়েছি। নিউজিল্যান্ডে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সেলিমের লাশ যেন দ্রুত দেশে পৌছে তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সেলিমের ভাই শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের এক বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে সেলিম সবার ছোট। সরকারের কাছে একটি চাওয়া দ্রুত যেন আমার ভাইয়ের লাশ দেশে পৌছানোর ব্যবস্থা করেন।