আল মামুন সোহাগ,(চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি): চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রাম থেকে ইমরান (৩০) একই উপজেলার হাসাদহ থেকে লিটু (২৮) নামের দুই যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। প্রথমে তাদের কেউ চিনতে না পারলেও ক্রমেই তাদের পরিচিতি পরিস্কার হয়ে ওঠে।
নিহত ইমরান আলমডাঙ্গার মসজিদপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত কন্সটেবল আব্দুর রহমানের ছেলে ও লিটু ইমরানের সহযোগী বাদেমাজু গ্রামের আনিসের ছেলে। তারা দু‘জনই দীর্ঘ বছর নানা অঘটনের নায়ক হিসেবে পরিচিত ছিল।
ইমরানের মাথায় এবং বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। কে বা কারা কেন ইমরান ও লিটুকে হত্যা করেছে এ ব্যাপারে পুলিশ কিছু বলেনি।
জানা গেছে, ইমরান আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার। তার বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও মিরপুর থানায় ডাকাতি, ছিনতায়, ধর্ষণ ও চুরিসহ প্রায় দেড় মামলা রয়েছে।
জীবননগর থানা পুলিশের ডিউটি অফিসার এসআই সিরাজুল ইসলাম জানান, কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। খোঁজ-খবর নিয়ে পরে জানানো হবে।
এদিকে, ইমরানের গুলিবিদ্ধ লাশ জীবননগরে পাওয়া গেছে সংবাদে আলমডাঙ্গার মানুষের মধ্যে নানা আলোচনা উঠে আসতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন প্রথমেই ইমরান বখে যায় তার মায়ের কারনে। ইমরানের মা অনেক আগে থেকেই অনৈতিক কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ে। গত ১১ সালের ফেব্রুয়ারীতে র্যাব মসজিদপাড়ার বাড়ি তল্লাশী করে ৭০ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করে। মায়ের অনৈতিক কাজই উসকে দেয় ইমরানকে সন্ত্রাসী করে তুলতে।
ক্রমেই চাঁদাবাজি, অপহরন, ডাকাতি, ধর্ষন, ছিনতাইসহ মেয়েদের ইভটিজিং করা ইমরানের জীবনের নিয়মিত কাজের অংশ হয়ে পড়ে। এক সময় সে নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। পুলিশ একাধিকবার তাকে আটক করে জেলে ঢুকালেও জামিনে বেরিয়ে আবার সে অপরাধ জগতে ঢুকে পড়ে। সবশেষে আলমডাঙ্গা পুলিশের অনবরত অভিযানের ফলে সে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
তবে, মসজিদ পাড়ার অনেকেই বলেছেন,ইমরান মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতো। গোপনে থেকে আবার বাড়ি ছাড়তো। দুদিন আগেও তাকে গোপনে বাড়িতে ঢুকতে দেখেছে এমন একজন জানায়,। বৃহস্পতিবার সকালে লাশ পড়ে আছে সংবাদ পেয়ে পুলিশ তা উদ্ধার করে।
অন্যদিকে মহেশপুর উপজেলার অর্ন্তগত বকুন্ডিয়া মাঠে উদ্ধারকৃত লাশের নাম লিটু(২৮)। সে আলমডাঙ্গা উপজেলার বাদেমাজেপুর গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে বলে স্থানীয় সুত্র জানিয়েছেন। লিটুর লাশ এলাকাবাসীর কথিত বলামতে জীবননগর উপজেলার বকুন্ডিয়া মাঠে পাওয়া গেলেও ঘটনাস্থলটি মহেশপুর থানার অর্ন্তগত হওয়ায় তাকে মহেশপুর থানা পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তারা দু’জনই সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য। এলাকায় তারা ওস্তাদ-শিষ্য হিসাবে পরিচিত এবং তাদের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় এক ডজনের বেশী মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেল জানান, নিহত ইমরান চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের মোস্ট ওয়ানটেড। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবসাসহ ১৪টি মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ দীর্ঘদিন হন্যে হয়ে খুঁজছিল।